নিজেস্ব প্রতিবেদকঃ চোরাচালানো ও মাদক ব্যবসা করে রাতারাতি কোটিপতি বনে গেছেন সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলা যুবলীগের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক সাকির হোসেন সাগর। তিনি এক সময় সামান্য গার্মেন্টসের দোকানদার ছিলেন। সেই দোকান ছেড়ে সুনামগঞ্জ জেলার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে গোপনে ভারত থেকে চোরাই পথে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে
শাড়ি, থান কাপড় কসমেটিক ইন্ডিয়ান মদ, ইয়াবা, গাঁজাসহ কালোবাজারি করে হঠাৎ বিত্তশালী সাকির হোসেন সাগর। ধর্মপাশা উপজেলা যুবলীগের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক পদ বাগিয়ে নেন তিনি।তার নামে ধর্মপাশা থানায় একটি হত্যা মামলা ও দুটি চোরাচালান মামলা রয়েছে।
ধর্মপাশা যুবলীগের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক সাকির হোসেন সাগরের বর্তমানে উপজেলার সেলবরষ ইউনিয়নের উওর বীর গ্রামে রয়েছে তার আলিশান ডুপ্লেক্স বাড়ি ও বিলাসবহুল গাড়ি। এছাড়া তার রয়েছে গরুর খামার হয়েছে ও নামে-বেনামে বেশকিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
যুবলীগ নেতা সাকির হোসেন সাগর হোসেন সেলবরষ ইউপি সাবেক চেয়ারম্যান নূর হোসেনের ছেলে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের আগে সাকির হোসেন সাগর উপজেলার বাদশাগঞ্জ বাজারে আসপিয়া সুপার মার্কেটে একটি রুম ভাড়া নিয়ে সামান্য একটি গার্মেন্টসের দোকান করতেন। সেই দোকান ছেড়ে তিনি সুনামগঞ্জ ১ আসনের সাবেক এমপি মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের ঘনিষ্ঠজন ও ক্যাডার হয়ে দলীয় প্রভাব কাটিয়ে দীর্ঘ ১৫ বছর গোপনে ভারত থেকে চোরাই পথে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে শাড়ি, থান কাপড় কসমেটিক ইন্ডিয়ান মদ, ইয়াবা, গাঁজাসহ বিভিন্ন পর্যায়ে সামগ্রী এনে তারা রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে কোটিপতি বনে যান যুবলীগ নেতা সাগর । ধর্মপাশা যুবলীগের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক সাকির হোসেন সাগর
কালোবাজারি, মাদক সিন্ডিকেট, হুন্ডি ব্যবসা, চাঁদাবাজিসহ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে তৎপরতা চালাতে থাকেন সাগর। ছাত্রলীগ যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের ছত্র ছায়ায় গড়ে তোলে বিশাল ক্যাডার বাহিনী।আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা থাকাকালে সাগর তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে কালোবাজারি, মাদক সিন্ডিকেট, হুন্ডি ব্যবসা, চাঁদাবাজিসহ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডসহ সাধারন মানুষকে জিম্মি করে চালাতে থাকে নির্যাতনের স্টিম রোলার। তার ক্যাডার বাহিনীর ভয়ে এলাকার লোকজন প্রতিবাদ তো দূরের কথা একটু শব্দটি মুখে আনতে পারেনি।
৫ ই আগস্টে আওয়ামী সরকার পতনের পরেও
যুবলীগ নেতা সাগর এখনো এলাকায় মাদক ও চোরাচান ব্যসবা করে প্রকাশ্যে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন।
এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে নানা ক্ষোভ রয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক জনপ্রতিনিধি জানান, সগর ২০০৮ সালের আগে নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম নেয়া সাকের হোসেন সাগর মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের ঘনিষ্ঠজন হওয়ে দলীয় প্রভাব কাটিয়ে গত ১৫ বছর চোরাচালান ও মাদক ব্যবসা করে কোটি টাকার মালিক হয়ে যান। সগরের বিরুদ্ধে ধর্মপাশা থানায় একটি হত্যা মামলা ও দুটি চোরাচালান মামলা রয়েছে। সেই মামলায় সে দীর্ঘদিন জেল কেটে জামিনে বের হয়ে আবারো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এখন এলাকায় সবচেয়ে প্রভাবশালী সে।
বিএনপির একাধিক নেতা জানান যুবলীগ নেতা সাগর কালোবাজারি, মাদক সিন্ডিকেট, হুন্ডি ব্যবসা, চাঁদাবাজিসহ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করে সে কোটি টাকার মালিক হয়েগেছে। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা থাকাকালে সাগর বিএনপি সহ সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচার নির্যাতন করেছে। এখনো এলাকায় মাদক ও চোরাচান ব্যসবা করে প্রকাশ্যে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। তাকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।
নাম প্রকাশ করা সত্ত্বে ছাত্রদলের একাধিক নেতা জানান, যুবলীগ নেতা সাগর আওয়ামী লীগের ছত্র ছায়ায় ছাত্রলীগ যুবলীগ ও গড়ে তোলে বিশাল ক্যাডার বাহিনী দিয়ে প্রকাশ্যে মাদক ও চোরাচান ব্যসবা করে কোটি পতি হয়েগেছেন। এখনো এলাকায় প্রকাশ্যে মাদক ও চোরাচান ব্যসবা নিয়ন্ত্রণ করছে। তাকে দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।
বাদশাগঞ্জ ডিগ্রী কলেজ শাখার ছাত্রদলের আহ্বায়ক নাজমুল হাসান তপু বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সাগর অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে তিনি শূন্য থেকে কোটিপতি বনে গেছেন। আমরা চাই তাকে আইনের আওতায় আনা হোক এবং তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হোক।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা শাকির হোসেন সাগরের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলে মোবাইল বন্ধ থাকায় তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে ধর্মপাশা থানার ওসি মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন যুবলীগ নেতা সাগরের বিরুদ্ধে ধর্মপাশা থানায় একাধিক মামলা রয়েছে আমাদের ডেভিল হার্ট অভিযান অব্যাহত আছে তাকে গ্রেপ্তারের জন্য আমাদের চেষ্টা অব্যাহত।
জেলা পুলিশ সুপার তোফায়েল আহাম্মেদ বলেন,
এ বিষয়ে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে তাকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।