সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
নদীর তীর থেকে বেশ দূরেই ছিল আলীপুর বাজার। সেখানে গড়ে উঠেছিল বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। তাতেই কোনোমতে চলছিল ব্যবসায়ীদের সংসার। একমাত্র অবলম্বনকারী এসব দোকানপাটের কোনো অস্তিত্বই এখন নেই বললেই চলে। গত ৫ বছর আগেই নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে অনেক দোকানপাট। সেইসাথে প্রতি বছর বর্ষাকালে মেঘালয় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি খাসিয়ামারা নদীর ঢলের তোড়ে ভেসে গেছে রাশি রাশি মূল্যবান বনজ ও ফলজ গাছপালা। নিজস্ব দোকানভিট ও গাছগাছালি হারিয়ে এখন অনেকেই পথে বসেছেন। অনেকে আবার অন্যত্র ভাড়াটে দোকানে চালিয়ে যাচ্ছেন ক্ষুদ্র ব্যবসা। গত কয়েক বছরে পাহাড়ি খরস্রোতা খাসিয়ামারা নদীর বুকে সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের আলীপুর গ্রামের সিরাজ মিয়া, জাহের মিয়া, নানু মিয়া, দুলাল মিয়া, ভানু বিবি ও ফিরোজ আলীসহ অনেকেই। পাহাড়ি ওই নদীটিই এখন কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে আলীপুর বাজার ও আলীপুর গ্রামসহ পার্শ্ববর্তী এলাকা। তথাপি ভাঙন রোধে এখনো সরকারি কোনো উদ্যোগ নেয়নি পাউবো।
সম্প্রতি সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, আলীপুর বাজার পার্শ্ববর্তী বসতবাড়ির অধিকাংশই চলে গেছে রাক্ষুসে খাসিয়ামারার পেটে। হতাশার হাতছানিতে তবুও বুকভরা সাহস নিয়ে ভাঙন রোধে নদীর পাড় ঘেঁষে বাঁশ ও ইকড়গাছ লাগিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। অপরদিকে আলীপুর বাজারের পাশে নির্মাণাধীন নতুন ব্রিজটিও রয়েছে ঝুঁকির মুখে। সহসা বিলীন হতে পারে নদীগর্ভে।
এদিকে সুরমা নদীর তীব্র ভাঙনে একই ইউনিয়নের শরীফপুর গ্রামের অনেকের ভিটেমাটি ও ফসলি জমিসহ পার্শ্ববর্তী সাইডিংঘাটে অনেক ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান হারানোর আশঙ্কায় ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছেন ভুক্তভোগীরা। দৃশ্যমান এসব আলামত নজরে আসলেও কার্যত না দেখার ভান করছেন সংশ্লিষ্টরা।
স্থানীয়দের দাবি পানি উন্নয়ন বোর্ড ( পাউবো) সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ভাঙন রোধে এখনই কার্যকরী পদক্ষেপ না নিলে ক্রমশ আলীপুর বাজার, আলীপুর গ্রাম ও সাইডিংঘাটের বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কোনো অস্তিত্বই থাকবেনা। ফলে ব্যবসায়ী ও নদী তীরের বাসিন্দারা পড়বেন চরম সংকট ও বিপর্যয়ে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান হারুন অর রশীদ বলেন, সুরমা নদীর তীব্র ভাঙনে সাইডিংঘাটের বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও খাসিয়ামারা নদীর ভাঙনে আলীপুর বাজার ও আশপাশ এলাকা ঝুঁকিতে রয়েছে। এসব ভাঙনরোধে পাউবোসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে আমি জোর দাবি জানাচ্ছি। #